সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

প্রশংসিত ৮

 প্রশংসিত-৮ ১. আকাশে ঘনঘন বিদ্যুতের চমক। আগুনের গোলার মতো আলোর রেখা। তিরের গতিতে ছোটে গিয়ে এক জায়গায় অদৃশ্য। যেন দক্ষ শিকারির তাক করা অলঙ্ঘনীয় অভীষ্ট। মিস হওয়ার সুযোগ-ই নেই। মক্কার আকাশে এমন অগ্নিতিরের গতিবিধি বেড়ে গেছে কিছুদিন ধরে। জিন-শয়তানদের মাঝে চরম হতাশা! আকাশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পালিয়ে মরছে। আত্মগোপনের চেষ্টায় মগ্ন কেউকেউ। দুষ্টু জিনদের একদলের সাথে অপর দলের সাক্ষাৎ হলো। বন্ধুগণ, ঘটনা কী? আমাদের প্রতি উল্কাবৃষ্টি শুরু হলো কেন হঠাৎ? শয়তানের সাহায্যে ফেরেশতাদের গোপন কথায় আড়িপাতা কঠিন হয়ে পড়েছে ইদানীং। গণকদের কাছে তথ্য সরবরাহ করতে পারছি না। এই কারণে তাদের অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে। অপরদল শোনালো বিষ্ময়কর দুঃসংবাদ! আপন সম্প্রদায়কে সতর্ক করে বললো—আড়িপাতা বন্ধ করো। “আমরা ফেরেশতাদের মুখে এমন এক কিতাবের পাঠ শুনেছি, যা ইতোপূর্বের কিতাবগুলোকে সত্যায়িত করে এবং সত্য ও সরল পথের দিশা দেয়।” (সুরা ৪৬: ২৯-৩০)। অতঃপর হতাশ জিনসকল হেদায়েতের আশায় মক্কায় নেমে আসতে শুরু করলো… ২. ছোটোখাটো এক পূজোমণ্ডপ। মূর্তির উদ্দেশে সেখানে বাছুর বলি হয়েছে। কাচা মাংসের ভাগ নিতে উপস্থিত মক্কার অন্যতম বীরশার্দূল
সাম্প্রতিক পোস্টগুলি

আমার ভেতরে বাহিরে অন্তরে অন্তরে

আমি মানুষটা একা। ভীষণ ভীষণ একা। একাকী জীবনে আমার সঙ্গী কেবল একজনই। তার নাম ‘একাকীত্ব’। বন্ধুত্ব কী—সেটার সংজ্ঞায়নও আমার অজানা। সঙ্গী-সঙ্গ আমার কাছে কেবলই আভিধানিক পরিভাষা। কারণ, বন্ধু-বান্ধব, সঙ্গী-সাথি এ জীবনে হয়ে ওঠেনি। ওঠেনি—তার পেছনে দুটো কারণ হতে পারে। প্রথমটা—আমার অযোগ্যতা। মানুষ হিসেবে আমি যে খুব একটা ভালো—সে কথা জোর দিয়ে বলতে পারি না। তাই যে কেউ আমার উপর খুব অল্পদিনেই বিরক্ত হয়ে ওঠে। অতঃপর ফোটে। ফোটে অর্থ এখানে ফুল ফোটা নয়; পালিয়ে যাওয়া। আর যে একবার পালায়, তাকে এই জনমে দ্বিতীয় বার দ্বারে ঘেঁষতে দেখিনি। সৌজন্য রক্ষায় বন্ধুত্বের ভাব দেখায় কেবল; আরেঠারে ঠিকই বুঝিয়ে দেয়—“মুই তোমা ছাড়াই বেহাল তবিয়তে থাহি। চলার পথে পথেঘাটে তোমার ছায়া না-মাড়ালেই বাঁচি।” দ্বিতীয় কারণটাই সম্ভবত প্রধান। আমি কোনোকালে খুব একটা পয়সাওয়ালা ছিলাম না৷ আমার পকেট ছিঁড়ে টাকা পড়েছে—এমন নজির নেই বললেই চলে। যে কয়েকবার পড়েছিল, তা পকেট ফুটো ছিল বলে; ওজনের কারণে নয়। টাকা ছাড়া এখন পানিও মিলে না। তাই ‘পানির অপর নাম জীবন’ কথাটা এখন শুদ্ধ নেই। শুদ্ধটা হচ্ছে—‘টাকার অপর নাম জীবন’। জীবন যেখানে নেই, সেখানে বন্ধু আর বন্ধুত্ব অ
 চেনা লোকালয়; অচেনা রূপ —সৈয়দুল হক বিকেল চারটা। বাস থেকে নেমে চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। প্রায় দুমাস পর শহরের সাথে দেখা। দুমাস আগে কদিনের জন্য বাড়ি গিয়ে আঁটকা পড়েছি। লকডাউন শুরু হওয়ায় ফেরা হয়নি। গ্রামের এক কোণে পড়ে থাকতে থাকতে দম বন্ধ প্রায়। লকডাউন শিথিল হওয়ায় শহরে ছোটে আসা। সীমিত আকারে যানবাহন চলছে। বাসে উঠতে-নামতে মানা হচ্ছে বাড়টি সতর্কতা। আগেকার মতো ঝুলোনি আর দুলুনি খাবার সুযোগ নেই। দু-সিটে একজন বসছে। তাতে পঞ্চাশ টাকার ভাড়া উঠেছে আশি টাকায়। অবশ্য যাত্রীও অত নেই। না-হলে কি বাসে উঠে ঘণ্টাখানেক বসে থাকতে হয়... লোকজন নেই রাস্তাঘাটেও। এই যে, মুরাদপুরের মোড়। এখানটায় গাড়ি আর মানুষের ভিড়ে ধম ফেলা কঠিন ছিল। লোকের হৈচৈ আর গাড়ির হর্নের অত্যাচারে বেশিক্ষণ থাকা-ই চ্যালেঞ্জিং। অথচ এখন কত শুনশান। রাস্তা কিংবা রেস্তোরাঁ—সবটাই ফাঁকা পড়ে আছে। কয়েকটা রিকসা আর হাতে গোনা কয়েকজন লোক ছাড়া আছে বলতে দৈত্যাকার বিল্ডিংগুলো আর ফ্লাইওভার নামের অঘোষিত স্থলসেতুটা। ফুট ওভার ব্রিজটায় ভিক্ষুকের ঠাসাঠাসি ছিল। দেখা যাচ্ছে না তেমন একটা। ভিক্ষা নেবেই বা কার কাছ থেকে৷ শহর যে জনশূন্য প্রায়। ফ্লাইওভারের নিচে লোহার বেষ

রমজান মাহিনা

রমজান মাহিনা —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক দ্বারে এসেছে আবার, সেই রহম খোদার রমজান মাহিনা ধরা পেয়েছে আবার খরা পেরিয়ে জোয়ার— রহমত খজিনা। মাফ করিবে খোদায়; হাঁফ ছেড়েছে সবাই সিজদায় পড়ে আজ, পাপ নিয়াছে বিদায় সাফ হয়েছে হৃদয় কোলাহল করে রাজ। ছেড়ে শয়তানি কাম, পড়ে খোদার কালাম, চোখে পর্দা-দখল, হাতে তসবির দান, মুখে জপ সোবহান হাঁকে মসজিদে চল। দেখো জনম-খাদক; যার খাওয়াটাই শখ সদা খাই খাই রব, ডরে এক আল্লার—ঘরে থেকে অনাহার করে সুখ অনুভব। নিয়ে উপাদেয় সব, সবে রয়েছে নিরব পেটে ক্ষুধা-অস্থির— প্রভু দেয়নি আদেশ তাই করে সমাবেশ পড়ে দোয়া-তকবির। রব উঠে তসলিম, ওরে ওরে মুসলিম সম্ভাষে মালায়েক, সব জান্নাতি দ্বার খোলে প্রভু-করুণার ক্ষমে শত নালায়েক। লভে স্বর্গী সুবাস বহে মুক্ত বাতাস পুরো ধরণী অতল শুধু মুসলিম নয় যত ধর্ম ধরায় সেথা মিশেছে সকল।

দয়াময়

দয়াময় (কাব্যানুবাদ: সুরা আর-রহমান) —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক আল্লার নামে শুরু, যিনি সবাকার— করুণার পারাবার, কৃপার আধার। সীমাহীন দয়াময়—শেখালো কুরান, সৃজিয়া মুহাম্মদ—সেরা ইনসান। সৃষ্টির আদি হতে অন্তের জ্ঞান আছে যত সবটাই করেছেন দান। রবি শশী চলে তাঁর নিয়মে নিরব, গাছপালা তরুলতা সিজদায় সব। উন্নত করেছেন আকাশের ধার, উপমায় যেন তা-ই দাঁড়িপাল্লার। করো না, করো না কভু লঙ্ঘন তার পরিমাপে নীতি মেনো দাঁড়িপাল্লার। ধরণী সৃজন করে মানবের তরে ভরেছে সেথায় ফল আর খর্জুরে। আবরণে শস্য ও ফুলের বাহার, ওহে জীন, ওহে ইনসান, বলো— অস্বীকার করবে কী, রব-তায়ালার? শক্ত মাটির দ্বারা গড়ে ইনসান, আগুনের শিখা হতে জিন-উত্থান। বলো তবে বলো ওরে জিন-ইনসান, মানিবে না প্রভুজীর কোন কোন দান? পূর্ব ও পশ্চিমে আছে যত কিছু প্রভু তিনি সকলের, বাকি সবি নিচু। প্রভু তব দিয়াছেন দয়া এই ভবে, বলো সবি অস্বীকার করবে কীভাবে? প্রবাহিনী পাশাপাশি নিরবধি বয়, মিশে না-তো কভু তারা থাকে অক্ষয়। অগোচরে সকলের বেঁধেছি সে বাঁধ নাহি যেন মিশে কভু চলে কাঁধে-কাঁধ। মানব-দানব সবে এ

ধর্মটা যে ধর্ম নেই

ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর —মুহাম্মদ সৈয়দুল হক ধর্মটা যে ধর্ম নেই আর চর্ম কেবল আছে তা’য়, ধর্মমূলের কর্ম সকল দূর হয়েছে অচিন গাঁ’য়। জুব্বা টুপি পাগড়ি সবি বাড়ছে ক্রমে দিনে-দিন, মানুষগুলো হচ্ছে কেবল মুহাম্মদের ধর্মহীন (দরুদ)। তথ্যমতে নিত্য যারা গরীব-দুখীর ভাত মারে, গিয়ে দেখো ইদ-জুমাতে তারাই প্রথম কাতারে। যেই হুজুরে দিন-দুপুরে হালাল-হারাম বয়ান দেয়, দুই থেকে চার পয়সা পেলে ইমানখানাও বেইচা দেয়। পীর-সাধক আর ধর্মগুরুর বাড়ছে অভাব নিত্যদিন, পাত্র দেখে ছাত্র পোষে পীর নিজে বেশ ধর্মহীন। সহিহ হাদিস করছে হদিস দিনমজুর আর দিন-ফকির, মুহাদ্দিস আজ কলেজ-বালক ডাক্তারে-ও মুফাস্সির। প্রাথমিকের বাল-বালকে কাফের বলে রায় ছাড়ে, সোশ্যাল মামুর এই জগতে কার সাথে আর কে পারে! গাঞ্জা খেয়ে মঞ্চে উঠে পাঞ্জা দোলায় দেয় বয়ান, মোল্লা-মুনসির এই দশাতে যাবে কোথায় মুসলমান? কেউবা খেলে ফুটবল আবার কেউবা চড়ে রকেটে, দর্শকে কয় মারহাবা-জী হাদিয়া ভরুন পকেটে। সকাল থেকে রাত অবদি, রাত্র থেকে সকাল-তক, দীনটা ছিল সবটা-জুড়ে সবটা যেন থাকে হক। কর্ম যত ধর্ম সবি বলছে কুরআন মজিদে, অকর্মা

ধ্রুব

ধ্রুব ধ্রুব চা খাচ্ছিল। খেতে খেতে ভাবছে। ভাবতে ভাবতে খাচ্ছে। কোনটা আগে? ভাবনা না খাওয়া? খাওয়া না ভাবনা? আরে, এটা তো পান করার জিনিস; খাচ্ছে কেন? যাব্বাবা, কী যে মাথামুণ্ডু ভাবছে—কে জানে! পানকে খাওয়া ভেবে ভাবনার অপমান হয়েছে ঢের। আর না। এবার খাওয়ায় মনোযোগ দেয়া যাক। হে হে, মনোযোগ দেবার আগেই মনোভাব পাল্টে গেল? আবারো খাওয়া? ভাবনার মান-ইজ্জত একেবারে শেষ। কিন্তু না, এভাবে শেষ হতে পারে না। সে ভাবুক৷ ভাবনার অপমান সে হতে দেবে না। প্রয়োজনে পানকে যে-কোনো রীতিতে খাওয়া বানিয়ে ছাড়বে। আচ্ছা, চা’কে বিরিয়ানি ভাবলে কেমন হয়? হাঁ, বিরিয়ানি ভাবলেই হয়ে যায়। খাওয়া-পানের দ্বন্দ্ব শেষ। তা-ছাড়া চা আর বিরিয়ানির কালারটা কাছাকাছি। বিরিয়ানিতে ঝোল ঢালা হোক। মাখামাখি করে পান্তাভাত বানানো যাক। এবার পান্তাভাতের তরিকায় পুরুত পুরুত টানা যাক। আহা! সে কী স্বাদ, সে কী স্বাদ! ধ্রুব এবার চিৎকার দেয়—পৃথিবী বিরিয়ানির, পৃথিবী বিরিয়ানির। চায়ের কাপটা আর কাপ নেই। আকাশের বুকে সুসজ্জিত থালা। থালাটা আবার চাঁদের মতো। সে চাঁদে ঝিলিক মারছে। চাঁদটাকে একবার ডানহাতে, আবার বাঁহাতে। সেটাকে আবার কিছুক্ষণ পরপর মুখে পুরে লম্বা চুমুক। চু